come to mukthi and learn the truth
মুক্তিযোদ্ধারা বৈষম্যের শিকার কেন?
মুক্তিযোদ্ধারা বৈষম্যের শিকার কেন?
বলা হয়ে থাকে সকল মুক্তিযোদ্ধারাই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট সন্তান। তাহলেই সকল মুক্তিযোদ্ধারা জাতিগতভাবেই ভাই ভাই অর্থাৎ জাত ভাই বা যোদ্ধাভাই কারণ সকলের পদবী তারা মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিবাহিনী বা মুক্তিফৌজ "বিচ্ছু"।
জাতি ধর্ম বর্ণ গোত্রের যদি বৈষম্য না থাকে তাহলে আমরা সকলেই মনুষ্যপ্রাণী। আমরা আল্লাহ্ তায়ালার সর্ব শ্রেষ্ট জীব (মানুষ-মান ও হুষ=)মানুষ।
মুক্তিযুদ্ধকালীন ডেপুটি কমান্ডার ১৬ ব্যাটলিয়ান, এফ কোং অধ্যক্ষ মরহুম আব্দুর রাজ্জাক |
রক্ত মাংস জ্ঞান বুদ্ধি চৈতন্য উপলব্ধি অনুভূতি অতি তীক্ষ্ণ ও সূক্ষ্মভাবে স্নায়ুতন্ত্রের সাথে স্থাপন করেই আদিম রুপে একটি মাক্বলুকাত আল্লাহ্ সোবহানাল্লাহ তায়ালা সৃষ্টি করেছিলেন। বহু জ্ঞানী গুনি ঋষি দার্শনিক সাম্যবাদ মানবতাবাদের বহুবিধ তত্ত্ব, তথ্য ব্যাখ্যা হাজারো ভাবে প্রদান করেছেন। সকলের সকল গবেষণার মুল লক্ষ্য সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই। বিধাতাও মনুষ্যজাতির মধ্যে ভেদাভেদ রেখে সৃষ্টি করেন নি, তাই আমরা আশরাফুল মাক্বলুকাত অর্থাৎ আমরাই শ্রেষ্ঠ জীব ।
তো সে শ্রেষ্ট জীব মানব জাতিকে লক্ষ কোটি শ্রেণীতে আমরাই বিভক্ত করে সৃষ্টি করেছি নিম্নশ্রেণী, নিম্নবিত্ব, মধ্যশ্রেনী-মধ্যবিত্ব উঁচু শ্রেণী উচ্চবিত্ব। আমরাই সৃষ্টি করেছি হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খৃষ্টান। আমরাই ধনি গরীবের স্রষ্টা; আমরাই সমাজ ও সমাজপতি; আমরাই ধনি আমরাই গরীব আমরাই শ্রেনীবিভেদের কুঠার আঘাতে মানব সভ্যতাকে করেছি উঁচু নিচু ও মধ্যশ্রেণী বিন্যাস।
যখন রাজনৈতিক নেতাগণ অসহায় নিরীহ ঘর ছাড়া বাস্তহারা জীর্ণ শীর্ণ অথর্ব লাচারের নিকট ভোট ভিক্ষা চাইতে যান, তখন তারা ভুলে যান শ্রেনীবিভেদের অহমিকা ও অহংকারের কথা; তখন বস্তির দুর্গন্ধে তাদের নাগ কারণ ঐ জীর্ণ শীর্ণ অসহায় ব্যক্তিটির একটি মহা মূল্যবান ভোট তাকে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করতে সহায়তা করবে। সে কারণে অনেক লোভনীয় আশ্বাসের বানী শুনিয়ে ঐ অসহায় ব্যক্তিটিকে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখান। ঠিক একই ভাবে অনেক রাষ্ট্র প্রধানগণই এই ৩ লক্ষ মুক্তিযোদ্ধাদেরকেও বহু আশ্বাসের বানী শুনিয়ে, মাথায় থ্রি নাট থ্রি বন্দুকের ছবিওয়ালা টুপি পড়িয়ে, এক বেলা বিরিয়ানি খাইয়ে ক্বোরবানীর গরু প্রদর্শনীর মত লঙ মার্চ করতে শের ই বাংলা নগর অথবা বিজয় স্বরনীতে নিয়ে প্রখর রৌদ্রতাপে মগজ ঝলসে দেন। ভূয়সী প্রশংসা করেন; সনদ বিতরণ করেন; স্বর্ণের নামে পিতলের স্ক্রেচ প্রদান করেন; দুই চার হাজার টাকাও দেয়া হয় মাঝে মধ্যে।
ধরে নিলাম ওরা চোর লুটেরা জ্ঞানহীন লোভী দুর্বৃত্ত! তাই মন্ত্রী সচিব থেকে শুরু করে আয়োজকের সবাই মুক্তিযোদ্ধা ও বিদেশী সকল মুক্তিযুদ্ধে সমর্থনকারী বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সৌজন্যে “সন্মান না” প্রদর্শনের নামে লুট পাট করেছে। স্বর্ণ দিয়ে স্ক্রেচ তৈরির নাম করে ৩ লক্ষ মুক্তিযোদ্ধা, স্বাধীনতা, জাতিরজনক এবং বিদেশী সমর্থক গোষ্ঠীর সকলকে অপমান ও কলুষিত করেছে। সে বিচার জাতি না হয় নাই চাইলো।
আমার এ লেখার প্রসঙ্গ তা’নয়। ক্যাপ্টেন তাজ কি করেছেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কি করেছেন? আমি সেদিকে যাবো না। এমন কি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে সহজ সরল বুদ্ধিদীপ্ত গুণীজন “স্বাধীন বাংলা বেতার কাঁপানো”#চরমপত্রের” রচয়িতা এম আর আকতার মুকুল স্যারকে দিয়ে করানো মরহুম ব্রিগেডিয়ার আমিন উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, ভুয়া অধ্যক্ষ আহাদ চৌধুরী, বি এন পি’র রেদোয়ান আহমেদ বা বর্তমান হেলাল মোরশেদের কথাও বলতে যাবো না।
সব দুর্বৃত্তরাই এ ক্ষুদ্রভূমির সম্পদগুলো বিভিন্নভাবে বিভিন্ন সময়ে নানাবিধ প্রকল্পের নামে, উন্নয়নের নামে, রাজনীতির নামে, সংস্কারের নামে লুটে পুটে খেয়েছে। তাদের কথা লিখে আবার মামলা খেতে রাজি নই।
কিন্তু যে কথাটি বলতে চাই-সে কথাটি বলে কোন পণ্ডিতের অশ্রাব্য গালি খেতে হয় কেই জানে? তবু বলতে হয়; বলতে হবে। না বললে যে আমার উপরই আমি অবিচার করবো।
সম্প্রতি সর্বজনবিদিত প্রকাশ্যে ধূমপানের কারণে বিতর্কিত বীর মুক্তিযোদ্ধা মাননীয় সাংসদ, সমাজকল্যাণমন্ত্রী মরহুম সইয়েদ মোহসীন আলী ও আমার ভারতে মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষন কালীন ডেপুটি কম্যান্ডার অধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাক স্যারের মৃত্যুতে দেশের প্রধান দুই কর্ণধার কর্তৃক একজনকে মহাসন্মান আর একজনকে রাষ্ট্রীয় অমর্যাদার কারণে আমার বুকের ভিতর লুকিয়ে থাকা সকল হতাশা আজ আগ্নেয়গিরির অগ্নি স্ফুলিঙ্গের মতই জ্বলে উঠতে চাইছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যে কোন একজন ষ্টাফ এ শোকবানী গুলো প্রধানমন্ত্রীর স্বাক্ষর নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে প্রেরণ করেন। অতি সামান্য কাজ। এ কাজটি করতে কারো অনুমোদনের দরকার হয় না।
যদি সমাজকল্যানমন্ত্রী মহোদয় মৃত্যুকালীন রাষ্ট্রীয় মর্যাদা পান, তাহলে অধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাক স্যার কেন পাবেন না? এক দেশ, একই মুক্তিযুদ্ধের নায়ক, একই যোদ্ধা, একদিনেই মৃত্যুবরন করলেন। মর্যাদার ক্ষেত্রে কেন দুই রকম? এ প্রশ্নের উত্তর কে দেবেন?
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার জন্য? শুধুমাত্র এম পি মন্ত্রী আর জেনারেলদের জন্য?
ভেবেছিলাম, জীবনে আর কারো বিরুদ্ধে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে, অপকর্মের বিরুদ্ধে কখনোই লেখা লেখি করবো না। কিন্তু পারলাম না চুপ থাকতে।
আপনারা বড় বড় জ্ঞানি উচ্চ শিক্ষিত কবি সাহিত্যিক অধ্যক্ষ অধ্যাপক শিক্ষক ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার উকিল মোক্তার সবাই আমার চেয়ে অনেক ঢের বেশী বোঝেন। তাই আপনাদের হাতেই দেশ চলছে; উন্নয়ন হচ্ছে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। ধরে নিলাম এই এগিয়ে যাবার পিছনে-আমি হতভাগা মুক্তির বিন্দুমাত্র অবদান নেই। বুঝে নিলাম-আবারো আমি কঠোর সমালোচনার সম্মুখীন হব। তাতে এতটুকুন ভয় নেই আমার।
১৬ কোটী ১০ লক্ষ মানুষই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও মহামান্য রাষ্ট্রপতির দৃষ্টিতে সমান মর্যাদা সম্পন্ন। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাবলে একজন পিতা আর একজন মাতা।
একজন মুক্তিযোদ্ধার মহা প্রয়াণে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর শোক বানী মিডিয়ায় প্রকাশ করা হয়; ঠিক পাশাপাশি আর একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা উচ্চ শিখিত শিক্ষক মুক্তিযোদ্ধার ক্ষেত্রে একটি সংবাদও প্রচার করা হয় না ??????????????????
মুক্তিযোদ্ধা ও সমাজকল্যানমন্ত্রীর জন্য মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর শোকবানী প্রেরণ করা হয়;
মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ মাষ্টার আব্দুর রাজ্জাকের ক্ষেত্রে সেটই হল না কেন? আমি জাতির কাছে জানতে চাই; মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও মহামান্য রাষ্ট্রপতির সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছে কৈফিয়ত চাই। জীবিত সকল মুক্তিযোদ্ধাদের জানিয়ে দিন।
এই বৈষম্যের কারণেই বাঙ্গালী জাতির প্রানের দাবী ১১ ও ৬ দফা জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু কর্তৃক প্রণীত হয়েছিল। এই বৈষম্যের কারণেই পশ্চিমা হায়েনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে মহান স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিল।
আমরা এই বৈষম্যের অবসান চাই।
সকল মুক্তিযোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয়মর্যাদা সমানভাবে প্রদান না করা হলে ধরে নেবো স্বাধীনতার ফসল ৭০ দশকের মতই পশ্চিমাদের ঘরে ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন